ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় মো. মাজহারুল ইসলাম(১৯) নামে এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্র আহত হয়েছে। মাজহারুল ইসলাম উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের আলীনগর কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্র। সে একই ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের দলিল লেখক মো. কলিমউদ্দিন সরকারের ছেলে।
এ ঘটনায় মাজহারুল ইসলামের চাচা মো. কাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে মো. জিলানী(২০) কে প্রধান আসামি এবং কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য জিয়ারুলসহ এজহারভূক্ত ৫ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ১২ জনকে আসামি করে গত সোমবার ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজু করে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মামলার প্রধান আসামি মো. জিলানীকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে গত ১৮ নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় উচাখিলা বাজারের উত্তর পার্শ্বে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ওই কলেজ ছাত্রের উপর দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। জানা গেছে, জিলানীর নামে থানায় আরও একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া জিলানীর এসব অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে উচাখিলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে টিসিও দিয়েছিলেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
লিখত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যায় মাজহারুল ইসলাম তার বাবা দলিল লেখক মো. কলিম উদ্দিন সরকার কাছ থেকে দলিল রেজিষ্ট্রেশন গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উচাখিলা বাজার থেকে তাদের বাড়ি চরআলগী যাওয়ার উদ্দেশ্যে মোটর সাইকেলে রওনা হয়। বাজার থেকে উচাখিলা ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন আসা মাত্রই মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। আগে থেকেই উৎপেতে থাকা কিশোর গ্যাং পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাজহারুলের ওপর হামলা চালায়। এসময় তাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি বেদম মারপিট করে।
ভুক্তভোগী মাজহারুল ইসলামের চাচা কাজিম উদ্দিন বলেন, উচাখিলা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেনের হুকুমে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য একাধিক মামলার আসামি মো. জিলানীর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন লোক আমার ভাতিজার উপর হামলা চালায়। এ সময় মো. জিলানী আমার ভাতিজার প্যান্টের পকেটে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং একই চক্রের সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে ছোট আমার ভাতিজার প্যান্টের অপর আরেক পকেটে থাকা বাজার থেকে মেরামত করে আনা তাহার মায়ের ০১ ভরি ওজনের আনুমানিক ৯৫ হাজার টাকার একটি স্বর্ণের চেইন মূল্য নিয়ে যায়। ঘটনার পর পরই আমার ভাতিজাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি।
এ বিষয়ে উচাখিলা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও মামলার ৩ নম্বর আসামি মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমার উপর আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মূলত বিএনপির কিছু লোকজনের ইন্ধনে আমাকে বেকায়দায় ফেলতেই মামলায় আমার নাম দিয়েছে। আমি এই ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানিনা।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।