ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাট-বাজারে প্রচার চালাচ্ছেন। নিয়মিত করছেন উঠোন বৈঠক, জোরদার করেছেন বিট পুলিশিং কার্যক্রম। উপজেলার জনসাধারণকে বিভিন্ন অপরাধ থেকে বিরত রাখা ও সচেতন করে তুলতে এ উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান ওসি।
জানা গেছে, মো. ওবায়দুর রহমান গেল বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ওসি হিসেবে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় যোগ দেন। এর আগে তিনি ফুলপুর থানার ওসি(তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ থানায় যোগদানের পর থেকেই ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় সামান্য ঘটনায় হয়রানিমূলক মামলা করার প্রবণতা কমিয়েছেন তিনি। এছাড়া মাদক-জুয়া, ছিনতাই-চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি ও বাল্যবিবাহসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা করে চলছেন।
ঈশ্বরগঞ্জের জনসাধারণকে দেশ ও সমাজের প্রতি অধিকার-কর্তব্য পালনে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রায় প্রতিদিনেই সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রত্যন্ত গ্রাম, এলাকার হাট-বাজার, ঘাটে ছুটে চলেন তিনি।
পর্যায়ক্রমে সপ্তাহে দুই-একদিন থানার
পুলিশ সদস্যদের নিয়ে একটি ‘হোন্ডা মোবাইল টিম’ গঠন করে ওসির নেতৃত্বে জনসমাগম ও অপরাধপ্রবন বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে। এ সময় উঠতি বয়সের কিশোর-যুবকসহ সব বয়সী লোকজনকে সমবেত করেন ওসি। এরপর আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সচেতনতামূলক আলোচনা করেন। যে কোনো গুজব, উসকানি, ক্রিকেট খেলা নিয়ে বাজি ধরা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ইভটিজিং প্রতিরোধে এবং ফেসবুকের অপব্যবহার রোধেও চলে তাঁর প্রচারণা।
গত সোমবার ওসির নির্দেশনায়
ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার চর-হোসেনপুর গরুহাটা সংলগ্ন উচাখিলা অটো স্ট্যান্ডে
বিভিন্ন এলাকার শতাধিক মানুষের সমবেত করে এসব প্রচার চালায় থানা-পুলিশ। এ ছাড়া উপজেলার ১১ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার বিট পুলিশিং কর্মকর্তা ও কমিউনিটি পুলিশিং কমিটিদের সঙ্গে সমন্বয় করে আপসযোগ্য সমস্যা থানায় বসে সমাধান করে দেন ওসি।
মাইজবাগ ইউনিয়নের মাইজবাগ পাছপাড়া গ্রামের এনামুল হক বলেন, ‘ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি শীত, ঠান্ডা উপেক্ষা করে রাতে এলাকায় এসে বিভিন্ন অপরাধ রোধে মানুষের সচেতন করতে কথা বলছেন।’
উচাখিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহবুব আলম
বলেন, ‘ ওসি যেভাবে প্রচার চালাচ্ছেন এতে করে কিশোর, যুবকসহ সাধারণ মানুষ সচেতন হবে।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘দেশ ও সমাজ রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বস্তরের মানুষের দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে। সেই জায়গা থেকেই মাদক-জুয়া, ছিনতাই-চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, অজ্ঞান পার্টি, নারী শিশু নির্যাতন, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনতা মূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, অনেক সময় মিথ্যা অভিযোগ, মিথ্যা গুজব এবং সামান্য উসকানিতে সমাজের ও রাষ্ট্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। সাধারণ লোকজন যাতে প্রলোভনে পড়ে কোনো অপরাধে না জড়ায় এ জন্য এ ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে । ভবিষ্যতে এই ধরণের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দৃশ্যমান পুলিশি টহল জোরদার করা হবে। ’