ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অধিগ্রহণের অতিরিক্ত জমি দখল পূর্বক পারিবারিক কবরস্থান ভেঙে আশেপাশের বাসাবাড়ির ক্ষতি সাধন করে উপজেলা পরিষদের আইসিটি ভবন নির্মাণের অভিযোগ ওঠছে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানান, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ ও পাইলিংয়ের কারণে তাদের বাসাবাড়ির দেয়ালে দেখা দিয়েছে অসংখ্য ফাটল। ধসে পড়েছে উপজেলা পরিষদের সীমানা প্রাচীর। আতঙ্কে আশেপাশের ১০ পরিবার। এর আগে এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুফল পায়নি ওই ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
জানা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকায় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন দত্তপাড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির উপর বসবাস করে আসছিলেন মৃত মতিউর রহমানের ছেলে মো. মকবুল হোসেন ও তার ভাই আব্দুল্লাহ আল নোমান মাসুদ। গত শনিবার দুপুরে আব্দুল্লাহ আল নোমান মাসুদের বাসা ঘেঁষে অবস্থিত উপজেলা পরিষদের সীমানা প্রাচীর হঠাৎ ধসে পড়ে। এতে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর মাঝে আতঙ্ক আরও তীব্র হয়েছে বলে জানান মাসুদ। তারা আশঙ্কা করছে, যেকোন সময় তাদের বাসাবাড়ি ভেঙে যেতে পারে। যেকারণে নিজেদের বাসাবাড়ি ও জানলাম সুরক্ষার স্বার্থে (১৮ জুন) রবিবার বেলা ১২ দিকে নব-নির্মাণাধীন আইসিটি ভবনের স্থানে মরহুম জরিপ বেপারী , মরহুম আহম্মদ আলীর বংশধর ও এলাকাবাসীর ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ভুক্তভোগী পরিবারেরা।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের নির্মাণাধীন আইসিটি ভবন নির্মাণে অপরিকল্পিত পাইলিংয়ের কারণে আশেপাশের অন্তত ১০ পরিবার আতঙ্কে রয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে আব্দুল্লাহ আল নোমান মাসুদ বলেন, আমাদের পারিবারিক কবরস্থান ভেঙে আইসিটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আমরা বারবার লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রশাসন আমাদের কোন কথা আমলে নিচ্ছে না,বরং কবরস্থান ভেঙেই নির্মাণ করছে ভবন। এছাড়া নির্মাণকাজে অপরিকল্পিত পাইলিংয়ের ফলে আমাদের বাসাবাড়িতে ব্যাপক কম্পন সৃষ্টি হয়,ফেটে গেছে বাড়ির দেয়াল। ধসে পড়েছে উপজেলার সীমানা প্রাচীর। সরকারের কাছে আমাদের দাবি অধিগ্রহণের অতিরিক্ত যে জায়গায়টুকু দখল করে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে তা যেন আমাদের ফিরিয়ে দেয়। আমাদের পারিবারিক কবরস্থান যেন সুরক্ষিত থাকে।
ভুক্তভোগী মকবুল হোসেন বলেন, অপরিকল্পিত পাইলিংয়ের কারণে বাসাবাড়িতে কাঁপুনি ওঠে। আমরা বউ বাচ্চা নিয়ে অনেক আতঙ্কে আছি। কোন সময় যেন আমাদের বাসাবাড়ি ভেঙে পড়ে। প্রশাসনের লোকজনের সাথে অনেকবার কথা বলেও এর কোন সুরাহা পাচ্ছি না। সরকারের কাছে আমাদের দাবি বাসাবাড়ি ও ছেলেমেয়েদের কথা বিবেচনা করে যেন এর সঠিক সমাধান দেয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে সালমা আক্তার নামের একজন বলেন, কবরস্থান ভেঙে ভবন করা নির্মাণ হচ্ছে। আমরা বারবার অভিযোগ দিলেও আমাদের অভিযোগ প্রশাসন গ্রহণ করে না। আমাদের কোন কথাই তারা মানে না।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ভবন সরকারি জায়গাতেই করা হচ্ছে। সার্ভিয়ার দিয়ে মেপে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কবরস্থান তাদের জায়গাতে পড়েছে। ভবনের কাজ করতে গিয়ে কবরস্থান ধসে গেছে। টিকাদারকে বলা হয়েছে কবরস্থান পুননির্মাণ করে দিতে। নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে যদি তাদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় টিকাদারকে তা নিজ খরচে মেরামত করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।