ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কাইয়ুম(২৮) নামে এক ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীকে ৫ থেকে ৭ জনের সংঘবদ্ধ লোক পিটুনির পর দোকানে ভাঙচুর করে ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রবিবার (১২ জানুয়ারি) ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী কাইয়ুম বাদী হয়ে এজহারভুক্ত ৫জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামী করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এর আগে গত (১১ জানুয়ারি) শনিবার আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের ভাদাটি আনন্দ বাজারের কাইয়ুম টেলিকমে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন-ওই ইউনিয়নের ভাদাটি গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ ওরফে মনু(৫০),আঃ কুদ্দুস (৪৫),আব্দুল মালেক(৪০) ও আব্দুর রশিদের ছেলে মো. সেলিম(২৫),মৃত হাছেন আলীর ছেলে সবুজ মিয়া ওরফে সবু মেস্তুুরি(৩৮)। ভোক্তভোগী ব্যবসায়ী কাইয়ুম ওই গ্রামের আঃ কাদিরের ছেলে।
ঘটনার রাতেই ভাদাটি আনন্দ বাজারের কাইয়ুম টেলিকমে গিয়ে দেখা গেছে, দোকানের আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়েছে ও ৫,১০ ও ২০ টাকার কিছু নোটসহ ক্যাশবক্স ও মেঝেতে আলাদা পড়ে আছে। পিটুনিতে ব্যবসায়ী কাইয়ুম পড়নের কাপড় ছেড়া ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিটার দাগ দেখা গেছে। এসময় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় মো. মকবুল হোসেন(৫০) বলেন,’ কিছু বোঝে ওঠার আগেই ৫-৭ জন লোক কাইয়ুমের দোকানে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এবং কাইয়ুমকে মারধর শুরু করে। আমি তাদের ফিরাতে গেলে তারা আমাকেও এলোপাতাড়ি মারধর করে। ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সাইকুল ইসলাম(৩৫) বলেন,’ শনিবার মাগরিবের নামাজের পর আমি কাইয়ুম টেলিকমে বিকাশ থেকে টাকা উঠাতে আসি। এসময় হঠাৎ একদল লোক এসে দোকান ভাঙচুর ও কাইয়ুমকে মারধর করে এবং টাকা উঠানোর জন্য নিয়ে আস আমার হাতে থাকা বাটন মোবাইলটি নিয়ে চলে যায়।
এলাকার মো. জুয়েল মিয়া(৪৫) নামে একজন বলেন,’জমি বন্ধকের ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা কাইয়ুমের দোকানে রেখে আমি মসজিদে নামাজ পড়তে যাই। নামাজ পড়ে এসে দেখি হামলাকারীরা দোকান ভাঙচুর করে আমার টাকাগুলোও নিয়ে যায়। আঠারবাড়ি বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করেন আনোয়ার। তিনি তার এক ভাতিজাকে দিয়ে ব্যবসার মাল কেনা বাবদ ১ লাখ টাকা পাঠায় কাইয়ুমের দোকানে রাখতে। সেই টাকাও নিয়ে গেছে অভিযুক্তরা। কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে এমন প্রশ্নের জবাবে ভুক্তভোগী কাইয়ুম বলেন,’পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শনিবার সন্ধ্যার পর আমার দোকানে আব্দুর রশিদ,কুদ্দুস মিয়া ও আব্দুল মালেকসহ ৫-৭ জন লোক হামলা-ভাঙচুর করে দোকানে থাকা ১০ লাখ ৩৫ টাকা লুট করে নিয়ে যায় এবং আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্তদের এলাকায় গেলে তাদের পাওয়া যায়নি এবং একাধিক মোবাইল নম্বরে কল দিলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন,’খবর মাত্রই তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এবিষয়ে উভয় পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।