ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ১২৬ ভিজিডি কার্ডধারী পাননি ২১ মাসের চাল। প্রমাণ মেলেছে তদন্তে।
জানা যায়, ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট বা দুস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচির আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে অনলাইনে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঈশ্বরগঞ্জের রাজিবপুর ইউনিয়নে ৩১৫ জন নারীর নাম চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সরকারি বিধি অনুযায়ী, প্রত্যেক কার্ডধারী প্রতিমাসে ৩০ কেজি পরিমাণ চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু উল্লিখিত তালিকার ১২৬ জন উপকারভোগী, ২১ মাসের চাল পাননি। যা তদন্তে প্রমাণ মেলেছে। জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত কার্ডধারীদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত বছরের ১৪ নভেম্বর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সানোয়ার রাসেলকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেন। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- উপসহকারী প্রকৌশলী জনস্বাস্থ্য আবুল কায়সার তালুকদার ও মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমাতুজ্জহুরা। পরে ২০ নভেম্বর কমিটির সদস্যরা সরেজমিন তদন্ত শুরু করেন। তদন্তের প্রথম দিনেই ১২৪ জন কার্ডধারীর সাক্ষাৎকার নেন, যাদের মধ্যে ২৮ জন চাল পাননি। দ্বিতীয় দিন ২৩ নভেম্বর আরও ১১০ জন কার্ডধারীর সাক্ষাৎকার নেন, যাদের মধ্যে ২০ জন চাল পাননি। পরবর্তীতে ইউপি সচিব ও ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ২৬ নভেম্বর ৯ জন কার্ডধারীর সাক্ষাৎকার নেন, যাদের মধ্যে ৭জন চাল পাননি।
২৯ নভেম্বর ২৫ জন কার্ডধারীর সাক্ষাৎকার নেন, যাদের মধ্যে ২৪ জন চাল পাননি। সাক্ষাৎকারে মোট ৭৯ জন কার্ডধারী ২১ মাসের চাল পাননি বলে তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানতে পারেন। আরও ৪৭ জন কার্ডধারীর কোনো হদিস খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। এছাড়াও ভিজিডি পরিপত্রে উপকারভোগীদের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল বিতরণের নিয়ম থাকলেও একসঙ্গে তিন মাসের চাল বিতরণের অভিযোগও রয়েছে ভুক্তভোগীদের।
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক মায়া রানী সরকার বলেন, এ ধরনের ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। গরিবের নামে বরাদ্দ চাল আত্নসাতের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সানোয়ার রাসেল জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। উল্লিখিত ঘটনায় ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান একেএম মুদাব্বিরুল ইসলাম ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আলী ফকির দায় এড়াতে পারেন না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. হাফিজা জেসমিন জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি, এই ইউনিয়নের ভুক্তভোগীদের অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।