হিন্দু বাড়িতে কাজকরার সময় মাটি খুঁড়ে ৬৭০ টি স্বর্ণমুদ্রা পেয়েছে বলে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে জানায় একটি প্রতারক চক্র। ৪ হাজার টাকা মূল্যের প্রতিটি মুদ্রা ১ হাজার টাকাকরে বিক্রি করবে বলে একটি স্বর্ণমুদ্রা হাতেও দেয় ওই ব্যবসায়ীর। পুরো মুদ্রা কিনে নেওয়ার শর্তে ওই ব্যবসায়ী অগ্রীম ৩ লাখ টাকাও দিয়ে দেয় চক্রটিকে। এ অবস্থায় নকল স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে বাকিটাকা নিতে আসলে স্থানীয়রা প্রতারক চক্রের দুই যুবককে আটককরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আটকের পর ওই দুই যুবকের কাছথেকে (স্বর্ণের মতো দেখতে) ৩০০ গোলাকার ধাতব কয়েন উদ্ধার করা হয়। (০৭ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সোহাগী বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী মো. কামরুল হাসান (৩৫) নামে ওই যুবক বাদী হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগ দেয়। পরে পুলিশ তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান।
পুলিশ জানায়, আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন, মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার গজারিয়া গ্রামের প্রয়াত আলম শেখের পুত্র মো. আজাদ শেখ (৩২) এবং একই এলাকার আলামিয়ার পুত্র রবিউল শেখ (৩২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কামরুল হাসান নামে ওই যুবকের স্থানীয় সোহাগী বাজারে একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। ওই প্রতারক দু’জন গত ২৮ জানুয়ারি কামরুলের দোকানে আসে। দোকানে লুঙ্গি কেনার একপর্যায়ে জানায় যে তারা দু’জন রাজমিস্ত্রির কাজকরে এবং হিন্দু বাড়িতে মাটি খননের সময় ৬৭০টি স্বর্ণমুদ্রা পেয়েছে। ৪ হাজার টাকা মূল্যের প্রতিটি মুদ্রা ১ হাজার টাকাকরে বিক্রি করবে বলে একটি স্বর্ণমুদ্রা হাতেও দেয় ওই ব্যবসায়ীর। পরে ওই ব্যবসায়ী স্থানীয় একটি স্বর্ণালংকারের দোকানে স্বর্ণমুদ্রাটি পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারে মুদ্রাটি আসল। পরে প্রলোভনে পরে যায় ওই ব্যবসায়ী। একপর্যায়ে পুরো কয়েন নেওয়ার শর্তে ৩ লাখ টাকা অগ্রীম দিয়ে দেয় প্রতারক চক্রকে।
এ অবস্থায় পুরো কয়েন দিয়ে বাকি টাকা নিতে আসলে ফের কয়েকটি কয়েন পরীক্ষা করায় কামরুল। পরে স্বর্ণের দোকানের মালিক জানায় পূর্বের কয়েনটি আসল হলেও এগুলো নকল। এরপর স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ওই প্রতারক চক্রের দুই যুবককে আটককরে পুলিশে সোপর্দ করে। এদিকে স্বর্ণের মুদ্রা দেখিয়ে ওই ব্যবসায়ীর কাছথেকে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে দেওয়া বিষয়টি স্বীকার করে পুলিশ হেফাজতে থাকা প্রতারক চক্রের দুই যুবক।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান জানান, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। চক্রের বাকী সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আটককৃতদের নামে মামলা রুজু করা হয়েছে। ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে। এ ছাড়াও অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে’।