কটিয়াদীর মসূয়াতে অস্কার বিজয়ী সত্যজিৎ রায়ের বাড়িতে ঐতিহ্যবাহী মেলা
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার মসূয়া গ্রামে অস্কার বিজয়ী বিশ্ব নন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িতে প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ও আয়োজন করা হয়েছে।মেলা শুরু হয় প্রতি বছরের বৈশাখ মাসের শেষ সপ্তাহে। এলাকায় জনশ্রুতি আছে, প্রায় ২০০ বছর আগে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ হরিকিশোর রায় চৌধুরী কালভৈরব পূজা উপলক্ষে এই মেলার প্রচলন করেছিলেন। এরপর থেকে প্রতিবছর বৈশাখ মাসের শেষ বুধবার এ মেলা বসে।বর্তমানে কালভৈরব পূজা না হলেও বন্ধ হয়নি মেলা।সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটাটা এলাকায় ‘রায়’ বাড়ি নামেই পরিচিত। এক সময় এই বাড়িটিকে পূর্ব বাংলার ‘জোড়াসাঁকো’ বলে অভিহিত করা হত।গ্রামের ঐতিহ্যবাহী রায় চৌধুরী বাড়ির সামনের খেলার মাঠ ও পুকুরের আশেপাশের প্রায় চার একর ভূমিসহ বিশাল এলাকাজুড়ে এ মেলা বসে।সেখানে রকমারি পণ্যের কয়েকশ স্টল বসা ছাড়াও থাকে বাউল গান ও কবিতা পাঠের আসর।ফলে এ মেলাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্হান থেকে প্রথিতযশা কবি-সাহিত্যিকরা এ সময় মসূয়া গ্রামে আসেন।জানা যায়,এ রায় বাড়িতেই ১৮৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতাসহ প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী। ১৮৮৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতা বিশিষ্ট ছড়াকার সুকুমার রায়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির আগেই উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী সপরিবারে কলকাতা চলে যান।কারুকার্যখচিত ভগ্নপ্রায় প্রাচীন দালান পরিবেষ্টিত বিশালায়তনের রায় বাড়িটি বর্তমানে সরকারের রাজস্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। মেলায় নানারকম স্টলের পাশাপাশি কাঠের আসবাবপত্র গৃহস্থালি নানা ধরনের পণ্য, খেলনা,মিষ্টান্নদ্রব্য ও প্রসাধনীসমূহ।এছাড়াও শিশুদের জন্য চিত্তবিনোদনের জন্য রয়েছে নাগরদোলা। মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কবি,সাহিত্যিক ও বহু দর্শনাথীরাও আসেন।মেলাকে ঘিরে আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে উৎসব আমেজ বিরাজ করে।গ্রাম -বাংলার লোক-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি হচ্ছে গ্রামীণ মেলা।এ মেলা আমাদের সম্প্রীতির প্রতীক।ধর্ম,বর্ণ ও জাতিভেদে সকল ধর্মের লোকের আগমন ঘটে এ মেলায়।তাই এ মেলা অত্র অঞ্চলের মানুষের মিলনমেলা, প্রেম-প্রীতি,ভালোবাসার অটুট বন্ধন।