ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এক নারী সদস্যকে চুলের মুঠি ধরে জুতাপেটা ও শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান। শনিবার বোল ১১ টার দিকে উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে ইউপি চেয়ারম্যান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন উচাখিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম।
লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান বলেন, গত বৃহস্পতিবার আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সকল ইউপি সদস্যদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কক্ষে ভিজিডি কার্ড সংক্রান্ত এক জরুরি আলোচনায় বসি। আলোচনার এক পর্যায়ে ০৭,০৮,০৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রোকসানা বেগমের বিরুদ্ধে ০৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম আমার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন যে, রোকসানা বেগম তাকে মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করেছে।
এসময় উপস্থিত সকল ইউপি সদস্যদের সম্মুখে এবিষয়ে আমি রোকসানা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ করে কক্ষ ত্যাগ করে। রাস্তায় জনগণের সম্মুখে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বাড়ি চলে যায়। কিছুক্ষণ পর দেশীয় ধারালো রামদা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে ফিরে আসে এবং আমাকে প্রাণ নাশের চেষ্টা করে। এসময় উপস্থিত স্থানীয় লোকজন তাকে নিবৃত করে। পরে সে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়ে থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ করে। অভিযোগে উল্লেখ করে আমি তার চুলের মুঠি ধরে জুতাপেটা করেছি। তার বসতবাড়িতে হামলা করে ১৫-২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করেছি ও তাকে শ্লীলতাহানিও করেছি। আমার বিরুদ্ধে আনিত এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান আরোও জানান, রোকসানা একটি রাজনৈতিক মহলের সহযোগিতায় বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ওইদিন রাতেই তার বিরুদ্ধে থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। এই নারীর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের সাথে বাকবিতন্ডায় এক পর্যায়ে উচাখিলা বাজারে গলায় ছুড়ি ধরার অভিযোগও রয়েছে। ইউনিয়নের ৪.৫.৬ নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য ইয়াসমিনকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও রোকসানা এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত। তাই এমন একজন নারী সদস্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
উচাখিলা ইউনিয়নের আলাদিয়ার আলগী গ্রামের বাসিন্দা মো. জয়নাল মিয়া (৬৫) জানান, কিছুদিন পূর্বে পরিষদে চাল নিতে আসলে তাকে মারধর করে রোকসানা। এক পর্যায়ে তার পাঞ্জাবী, লুঙ্গী ও দাড়ি টেনে ছিড়ে ফেলে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত এলাকাবাসী জানায়, ইউপি সদস্য রোকসানা উচাখিলা বাজারে মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকে। প্রতিবাদ করতে গেলে বিভিন্ন ভাবে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হুমায়ূন কবির, নারী সদস্য ইয়াসমিন, তাসলিমা আক্তার, মেম্বার শহীদ মিয়া, সাইফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আশরাফুল আলম, মতিউর রহমানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।