ময়মনসিংহের ফুলপুরে আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে একটি বাড়িতে হামলা ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় লুটে নেওয়া একটি গরু জবাই করে তাঁর অনুসারীদের মধ্যে মাংস ভাগ—বাটোয়ারারও অভিযোগ ওঠে। এঘটনায় মামলার পর গা ঢাকা দিয়েছেন বওলা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম—আহবায়ক নুরুল আমিন মন্ডল। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশ।
জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধে গত ১৪ অক্টোবর ফুলপুর উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের দলিল লেখক আব্দুল খালেক ফকিরের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়। এতে নেতৃত্বদেন কোকাইল প্রথম খন্ড গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল আমিন মন্ডল। ৩০—৪০ জনের হামলাকারী দল একটি আধা—পাকা ঘর ভাঙচুর, ৪০—৫০টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নষ্ট করে এবং মালামাল লুটপাটসহ গরু ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরে গরুটি হামলাকারীরা জবাই করে মাংস ভাগ—ভাটোয়ারা করে নেয়।
ভুক্তভোগি আব্দুল খালেক ফকির বলেন, ১৯৯১ সালে নুরুল আমিন মন্ডল ও তাঁর বড় ভাই রুহুল আমিন মন্ডলের কাছ থেকে ৩৪ শতাংশ জমি ক্রয় করি। রুহুল আমিন মন্ডল জমি লিখে দিলেও নুরুল আমিন মন্ডল দেই দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপন শুরু করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে জমি আমার দখলে থাকায় আদালতে একটি মামলা হলেও রায় আমার পক্ষে আসে। কিন্তু গত ১৪ অক্টোবর নুরুল আমিন মন্ডল দলবল নিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুরসহ একটি ৮০ হাজার টাকা মূল্যের গাভী গরু গোয়াল থেকে নিয়ে যায়। পরে গরুটি আমাদের পার্শবতী পূর্বধলা উপজেলার হুগলা গ্রামে জবাই করে মাংস ভাগ—বাটোয়ারা হয়। এঘটনায় মামলা হলেও আসামীরা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে। আমি বর্তমান সরকারের কাছে ন্যায় বিচার চাই।
মামলার পর নুরুল আমিন মন্ডল গা ঢাকা দেওয়ায় তার কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার বড় ভাই রুহুল আমিন মন্ডল বলেন, ৩৪ শতাংশ জমির মধ্যে আমি আব্দুল খালেক ফকিরকে ১৭ শতাংশ লিখে দিয়েছি। তবে বাকি ১৭ শতাংশ নিয়ে নুরুল আমিনের সাথে কি হয়েছে আমার জানা নেই। ৩৪ শতাংশ ছাড়া আমাদের সেখানে আরও জমি রয়েছে, সেই জমির মধ্যে রোপন করা গাছ—গাছালী কাটা হয়েছে। তাদের গরু জবাই করে মাংস বিতরণের বিষয়েও আমি অবগত নই।
বওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব আলম ডালিম বলেন, এই জমিটি ক্রয় সূত্রে আব্দুল খালেক ফকির মালিক সকলেই জানে। আগে মানুষ মৌখিক ভাবেই জমা—জমি কেনা বেচা করত। তবে আব্দুল খালেকের সঙ্গে এখন যা করা হচ্ছে তা সম্পন্ন ভাবেই বেআইনী। আমরাও চাই বিষয়টির সুষ্ঠু সুরাহা হোক।
হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় গত ১৬ অক্টোবর ১৮জনের নাম উল্লেখ করে আব্দুল খালেক ফকির ফুলপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতার্ আব্দুল হাদী বলেন, মামলার এজাহারে ঘর—বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট এবং গরু নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এসকল বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত কাজ এগুনো হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও আওয়ামী লীগ নেতার দাপট না কমায় আতংকে রয়েছেন আব্দুল খালেক ফকিরের পরিবার।