ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব নিয়ে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের দোসর ও আওয়ামী লীগের কতিপয় চিহ্নিত ব্যক্তি ও মদদপুষ্টদের ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে হামলা, ভাঙচুর এবং গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য তথ্য দিয়ে অব্যাহতভাবে অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রেসক্লাব নির্বাহী পরিষদ।
বুধবার (০৮ জানুয়ারি) নির্বাহী পরিষদ-২০২৫ এর প্রথম সভায় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
সভায় বলা হয় যে, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব একটি ঐতিহ্যবাহী স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রেসক্লাব প্রতিবছর পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বর্ষসেরা সাংবাদিক পুরস্কার প্রদান (ময়মনসিংহ বিভাগ), সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে পদক প্রদান, সদস্য সন্তানদের বৃত্তি প্রদান, দেশের জাতীয় দুর্যোগে আর্থিক সহায়তা প্রদান, বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন, ক্লাবের অভ্যন্তরীণ খেলাধুলাসহ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জুলাই-আগস্ট বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার বদলের পর ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের দোসর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের জেলা যুগ্ম-আহবায়ক, বিএনএ’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, জাতীয় শ্রমিক জোট (জাসদ-ইনু) ময়মনসিংহের আঞ্চলিক সভাপতি, জাসদের মনোনয়ন নিয়ে একাধিকবার সংসদ সদস্য প্রার্থী ও অপসাংবাদিকতার ধারক-বাহক হিসেবে পরিচিত মো. শামসুল আলম খান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর আসগর হোসেন রবিন, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা সভাপতি এবং জেলা কৃষক লীগের ভূমি বিষয়ক সম্পাদক শিবলী সাদিক খান, জেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকসানা আক্তার, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তাসলিমা আক্তার রত্না, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আলমগীর কবীর উজ্জল খান ও দীপক দে, আওয়ামী লীগ মদদপুষ্ট জহর লাল দে, শুভ বসাক জয়, সুমন ভট্টাচার্য, বিশু সাহা, আশিকুর রহমান মিঠু, মফিদুল ইসলাম লাভলু, আবদুল হক লিটন, অনিন্দ্য মিন্টু, সাদেকুর রহমানসহ কতিপয় মাদক মামলার আসামি ও বিশৃঙ্খলাকারি দুর্বৃত্ত ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র বিরোধী অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য দাবি উত্থাপন এবং কোনো নিয়ম-নীতি, ভদ্রতা ও সৌজন্যতা ছাড়াই প্রেসক্লাবে এসে হট্টগোল, হামলা ও ভাঙচুর এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করে।
প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ বরাবরই অত্যন্ত ধৈয্যের সাথে পরিস্থিতি সামাল দেয়। একাধিকবার প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুরোধে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের জেলা ও মহানগর, জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যগণ প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি অবলোকন করে বহিরাগতদের নৈরাজ্য সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন।
এরপরও এসব ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের দোসর ও বিশৃঙ্খলাকারি দুর্বৃত্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ও ছবি দিয়ে অপপ্রচার এবং প্রেসক্লাবের কোনো কোনো সদস্যের নামে অসত্য তথ্য দিয়ে অব্যাহতভাবে মিথ্যাচার করছে। এজন্য নির্বাহী পরিষদ সর্বসম্মতভাবে উল্লেখিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের দোসর ও আওয়ামী লীগের চিহ্নিত ব্যক্তি ও মদদপুষ্ট দুর্বৃত্তদের ‘বিশৃঙ্খলাকারি’ হিসেবে চিহ্নিত করে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করেছেন। এরপরও যদি কেউ ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এসে হামলা, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় আরো বলা হয়, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব নির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২৫ এ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কতিপয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অব্যাহত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। প্রেসক্লাব নির্বাহী পরিষদ এসব অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বা¬ন জানিয়েছেন।
এমতাবস্থায় সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ইতোমধ্যেই ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে উদ্ভুত পরিস্থিতির একাধিক ঘটনার চিত্র প্রেসক্লাবের সিসি ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ এবং এসব বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।