বিষ ও রাসায়নিক সার মুক্ত শাক-সবজি উৎপাদন, গ্রামের আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ কৃষকের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দৃশ্যমান হয়েছে দৃষ্টিনন্দন মডেল ভিলেজ।
‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।’ জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনাকে সামনে রেখে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় এবং উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ঈশ্বরগঞ্জে দুটি মডেল ভিলেজ দৃশ্যমান হয়েছে। উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বড়হিত গ্রামে এবং মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামে এই দুটি মডেল গ্রামগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বড়হিত ইউনিয়নের মডেল গ্রামটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী আখছার খানের তত্ত্বাবধানে। অপরদিকে মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামের মডেল গ্রামটি দৃশ্যমান হয়েছে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জুবায়েরআহমেদের তত্ত্বাবধানে।
সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মডেল গ্রামগুলোতে বিষ ও রাসায়নিক সার মুক্ত শাক-সবজি, তরুলতা, বিভিন্ন ঔষধি ও ফলদ গাছে আচ্ছাদিত বাড়ির আঙিনা। পাশেই ভার্মি কম্পোষ্ট তৈরির শেড, খামারজাত সার উৎপাদন শেড, মাটি ও গোবর মিশ্রণ শেড করা দশটি বাড়িকে মডেল গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলেছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
বৃহত্তর ময়মনসিং অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করণ প্রকল্পে আওতায় পাঁচটি বাড়ি নিয়ে এই প্রথম একটি করে মডেল গ্রাম গড়ে তুলা হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রান্নার কাজ শেষ করে বাড়ির আঙিনায় নিরাপদ সবজি বাগান ও ফল বাগানে কাজ করছেন জোসনা নামের এক গৃহবধূ। যেখানে লাল শাক, পুঁই শাক, ডাটা, ডেরস, বিভিন্ন রকমের সবজির চাষের শেড। পাশ দিয়ে ঔষধি গাছসহ আম, লিচু ও লেবু গাছের চারা। এতে পারিবারিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেন ওই মডেল গ্রামের গৃহিনী জোসনা। এ প্রকল্পের আওতায় সারা বছরই শাক-সবজি উৎপাদন করতে প্রয়োজনীয় বীজ ও অন্যান্য সরঞ্জমাদি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে সরবরাহ করা হয় বলে জানান মডেল গ্রামের আমিনুল ইসলাম।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী আখছার খান বলেন, বিষ ও রাসায়নিক সার মুক্ত সবজি এবং ভার্মি কম্পোষ্ট সার উৎপাদনের এই গ্রাম দেখে এই এলাকার অনেকেই এই প্রকল্প চাচ্ছেন। এছাড়াও অনেকেই নিজ উদ্যোগে মডেল গ্রাম গড়ে তুলছেন।
মডেল গ্রামের আলমগীর মাসুদ বলেন, আমি ও আমার গৃহিনী বাড়ির কাজ শেষ করে এই মডেল গ্রামের কাজে সময় দেই। এতে আমাদের পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত শাক-সবজি বিক্রি করি।
মডেল গ্রামের কৃষক নূরুল আমিন বলেন, আমাদের এই মডেল গ্রামকে দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসে। এতেও আমরা খুব আনন্দ পাই। আমাদের উপ সহকারী ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তা জুবায়ের আহমেদ স্যার নিয়মিত এই প্রকল্প দেখতে আসেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি বাড়ি নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জে এই প্রথম মডেল গ্রাম গড়ে তোলা হয়েছে। এতে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত শাক-সবজি বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।