দীর্ঘ এক যুগ ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত থাকার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষকরা। ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন সরকারি কলেজে কর্মরত শিক্ষকরা রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে । তারা অবিলম্বে পদোন্নতির আদেশ (জিও) জারির দাবি জানিয়েছেন। তাদের ঘোষণা, আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ১৬ নভেম্বর থেকে কঠোর লাগাতার কর্মসূচিতে যাবেন তারা।
‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শিক্ষকরা জানান, ৩২তম বিসিএস থেকে শুরু করে ৩৭তম ব্যাচ পর্যন্ত প্রায় ২হাজার ৫০০ জন প্রভাষক পদোন্নতির সকল যোগ্যতা অর্জন করেছেন। অন্যান্য ক্যাডারে যেখানে ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে পদোন্নতি সম্পন্ন হয়, সেখানে শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষকরা ১২ বছর পর্যন্ত বঞ্চনার শিকার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষকরা বলেন, “নিয়মিত পদোন্নতি এখন শিক্ষা ক্যাডারে ‘সোনার হরিণ’-এ পরিণত হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতি ফিট লিস্ট থেকে জিও পর্যন্ত পৌঁছায়নি।”
শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রের শিক্ষা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তাগণ এই ক্যাডারের সঙ্গে বরাবরই “বিমাতাসুলভ আচরণ” করছেন। তারা আন্তঃক্যাডার বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘২৪-এর গৌরবোজ্জ্বল বিপ্লব পরবর্তী সময়ে প্রায় সব ক্যাডারে যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন। এমনকি কোনো কোনো ক্যাডারে একাধিক ভূতাপেক্ষ পদোন্নতিও দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সহযোগী অধ্যাপক, ব্যাংকাররা ৫ম ও ৬ষ্ঠ গ্রেডে, এমনকি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরাও ৬ষ্ঠ গ্রেডে পৌঁছে গেছেন। কিছুদিন আগেই বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অথচ শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক কর্মকর্তাগণ ১২ বছর পর্যন্ত পদোন্নতি বঞ্চিত। ‘
তারা জানান, পদোন্নতি নিশ্চিত করার জন্য এর আগে গত ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে মাউশিতে (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর) মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে ০২ নভেম্বরের মধ্যে ডিপিসি শুরু এবং ১২ নভেম্বরের মধ্যে পদোন্নতির জিও জারির দাবি জানানো হয়েছিল। সেই নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত কোনো আদেশ জারি হয়নি।
এই অচলাবস্থার অবসানের জন্য প্রভাষকরা চারটি মূল দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন: অনতিবিলম্বে পদোন্নতির সভা সম্পন্ন করতে হবে, ১২ নভেম্বরের মধ্যে ৩৭তম ব্যাচ পর্যন্ত সকল পদোন্নতিবঞ্চিত প্রভাষকের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির পদোন্নতির আদেশ (জিও) জারি করতে হবে, ৩৭ ব্যাচ পর্যন্ত যোগ্য সকলের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে সুপারনিউমারারি পদসৃজন করতে হবে, পদোন্নতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য দ্রুততম সময়ে পদ-আপগ্রেডেশন করতে হবে।