বড় ছোট সবমিলিয়ে ১৬ট নদনদী বেষ্টিত জেলা কুড়িগ্রামে রয়েছে অসংখ্য সমস্যা ও সম্ভাবনা। কুড়িগ্রাম জেলা একটি অনুন্নত পিছিয়ে পড়া বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর আবাসভূমি। তারউপর থেমে নেই নদী ভাঙ্গন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবুও কিন্তু এখানে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। এখানকার মাটিতে পড়ে রয়েছে হিরার চেয়ে দামী খনিজ পদার্থ, যা আহরণ করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্জন করে অবহেলার শিকার কুড়িগ্রামসহ দেশকে এক অতুলনীয় উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এজন্যই কুড়িগ্রাম থেকে এক অদম্য সংগ্রামী, বিপ্লবী, সাহসী, সুদক্ষ এবং সুশৃঙ্খল জীবন যাপনকারী, মাদক ও চাঁদাবাজি মুক্ত নেতার খুব প্রয়োজন। এখানে বিশ্বমানের এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দরকার যেখান থেকে বের হ’য়ে তাকে চাকরি খুজতে হবে না। সে হবে সুদক্ষ উদ্যোগক্তা এবং চাকরি তাকিয়ে থাকবে তার দিকে। এখানে ইতোপূর্বে যারা এমপি মন্ত্রী ছিলেন তাদের নিজেদের আকাশচুম্বী উন্নয়ন আর কিছুসংখ্যক দলীয় টাউট বাটপার ছাড়া এ জেলার দৃশ্যমান কিছু বা আমজনতার ভাগ্য উন্নয়ন হয়নি। সেজন্যই কুড়িগ্রাম-২ আসনসহ সবকয়টি আসনে সুশিক্ষিত, দক্ষ এবং দলীয় সংকীর্ণতার উর্ধ্বে যিনি সবধরনের কাঙ্ক্ষিত কাজ করবেন/ করতে পারবেন তাঁকেই যেন আল্লাহ পাক কবুল করেন এটাই সবার প্রত্যাশা।
২৯ জানুয়ারী সোমবার কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা অন্নপূর্ণা দেবনাথ’র হাতে মনোনয়নপত্র জমা করেন- কুড়িগ্রাম-২ আসনের প্রার্থীগণ এবং অন্যান্য আসনের প্রার্থীগণ নিজ নিজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে।
কুড়িগ্রাম-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা করেছেন- বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক অধ্যাপক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম (আনোয়ার) এবং বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আলহাজ্ব সাইফুর রহমান রানা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নেতা মোঃ রিপন মিয়া, এছাড়াও মনোনয়নপত্র জমা দেন গণঅধিকার পরিষদ মনোনীত ট্রাক মার্কার প্রার্থী বিন ইয়ামীন মোল্লা।
কুড়িগ্রাম-২ থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী কুড়িগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি আলহাজ্ব ইয়াছিন আলী সরকার, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এবং সাবেক জেলা সভাপতি ছাত্রদল-যুবদল ও সমাজসেবক আলহাজ্ব সোহেল হোসাইন কায়কোবাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সহ:সভাপতি- শিক্ষাবান্ধব সত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত কুড়িগ্রাম গড়ার লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ নূর বখ্ত মিয়া এবং ২৪শের গণ স্পিরিট, তরুণ প্রজন্মের আইকন উদীয়মান নেতা বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও মিডিয়া বান্ধব গণমানুষের মুখপাত্র, কুড়িগ্রাম-এ কুড়ি- তলা টাওয়ার স্থাপনের স্বপ্নদ্রষ্টা, তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণকারী, শিক্ষিত ও দক্ষদের বেকারত্ব দূরীকরণের ব্যাপারে তিন ক্যাটাগরীর ভাবনা, চিকিৎসা সেবার সকল ধরনের সমস্যা সমাধানের মধ্যে ডাক্তার ও জনবল সংকট নিরসনে সর্বোচ্চ সহায়তায় মনোভাব ব্যাক্তকারী কুড়িগ্রামের কৃতি সন্তান, এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ডক্টর আতিক মুজাহিদ (শাপলা কলি) এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত আলহাজ্ব পনির উদ্দিন আহমেদ ও নাগরিক ঐক্যের আব্দুস সালাম।
কুড়িগ্রাম-৩ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহী, যিনি আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার আইনজীবী মেম্বার, ফরেন অ্যাফেয়ার্সটিম (ইউরোপ), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী, ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহী: উলিপুরের এক অদম্য সংগ্রামের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী উলিপুর একটি জনপদ যেখানে বন্যা, খরা ও নদীভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আজও মানুষের জীবনে স্থায়ী ছাপ রেখে যাচ্ছে। কাঁচা রাস্তা, অপ্রতুল বিদ্যুৎ, মানসম্মত শিক্ষার ঘাটতি—এই বাস্তবতার মাঝেই প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষের সংগ্রামী জীবন। এই জনপদেরই সন্তান ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহী, যিনি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী ও সমাজসেবক হিসেবে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করেছেন।
উলিপুরের এক ধর্মভীরু মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া সালেহী প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন কিশোরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবং দাখিল পাস করেন সাত দরগাহ নেছারীয়া আলীয়া মাদ্রাসা থেকে। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। যুক্তরাজ্যে গিয়ে লিঙ্কনস ইন থেকে ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল, সিটি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স (BPTC) ও লিগ্যাল প্র্যাকটিস কোর্স (LPC), এবং লন্ডন সাউথ ব্যাংক ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ল সম্পন্ন করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি দেশ ও ইসলামের পক্ষে কাজ করতে যুক্ত হন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে একাধিক মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত হন, যার ফলে তিনি বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বাধ্য হন। দীর্ঘ ১৬ বছর প্রবাস জীবন কাটালেও তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে অক্লান্তভাবে কাজ করেছেন। যুক্তরাজ্যের সংসদ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থায় তাঁর বক্তব্য ও কার্যক্রম বাংলাদেশি প্রবাসী সমাজ ও আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে।
জুলাই গণবিপ্লবের সময় প্রবাস থেকে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠিত করেন, রেমিট্যান্স বয়কটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেন এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও কূটনৈতিক মহলে বাংলাদেশের ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেন।
২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই গণবিপ্লবের পর দেশে ফিরে এসে তিনি ‘সমৃদ্ধ উলিপুর’ গড়ার লক্ষ্যে উলিপুর উন্নয়ন ফোরাম প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর নেতৃত্বে সংগঠনটি শিক্ষা প্রসার, তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন, আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন, নদীভাঙন প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহী বিশ্বাস করেন—“যেখানে মানুষ ন্যায় ও উন্নয়নের পক্ষে একত্রিত হয়, সেখানে উন্নয়ন অনিবার্য।” তাঁর স্বপ্ন একটি দারিদ্র্যমুক্ত, শিক্ষিত, দক্ষ, স্বাস্থ্যকর ও প্রযুক্তিনির্ভর উলিপুর, যেখানে প্রতিটি মানুষ সমান সুযোগ, মর্যাদা ও নিরাপত্তা ভোগ করবে।
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি মোঃ তাসভীর উল ইসলাম এবং অধ্যাপক আক্কাস আলী (হাত পাখা)। এছাড়াও ২৭ কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক।
কুড়িগ্রাম-৪ থেকে গণযোয়ার সৃষ্টিকারী ও গণআকাংক্ষার প্রতিক মাটি ও মানুষের নেতা বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান (মোস্তাক) (দাঁড়ি পাল্লা), মোঃ আজিজুর রহমান (ধানের শীষ) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নেতা-
আনন্দঘন পরিবেশে কুড়িগ্রাম জেলায় চারটি সংসদীয় আসনে মোট ৩০টি মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা অন্নপূর্ণা দেবনাথ’র নির্বাচনী কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা।