মহাসড়ক ঘেঁষে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। স্টেশনের সামনেই ফায়ার সার্ভিসের পরিত্যক্ত প্রায় ১৭ শতক জমিতে একটা সময় ছিলো ঝোপঝাড় ও আগাছায় ভরপুর। সেই ঝোপঝাড়টি এখন পরিনত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন পুষ্টি বাগানে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ উদ্যোগে অব্যবহৃত ঝোপঝাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও যেন পরিত্যক্ত পড়ে না থাকে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের। তার ওই নির্দেশনার আলোকে ‘অব্যবহৃত জায়গায় সবজি ও ফলের চাষ, অর্থ-পুষ্টি বারোমাস’ শীর্ষক ইনোভেশন আইডিয়া বাস্তবায়নে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, লাল-সবুজ রংয়ের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে বাগানটি। সেই বাগানে রয়েছে বাঁধাকপি, কুমড়া, মূলা, গাজর, কাঁচা মরিচ, ঢেড়শ, পেঁপে, পুইশাক, বেগুন,লালশাক, পালংশাক, ডাটা, পেয়ারা, কলমি শাক, লাউ,ধনেপাতাসহ বিভিন্ন শাক সবজির গাছ। ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা ও দমকলকর্মীরা নিজ হাতে বাগান পরিচর্যা করেন।
বাগানটিতে সব রকমের শাক-সবজির ফলনও ভালো হয়েছে। বাগানের এসব ফল, শাক-সবজি দেখে উচ্ছ্বসিত এখানকার কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ। এলাকার বাসিন্দা ও পথচারীদের নজর কেড়েছে এ পুষ্টি বাগান। এমন সুন্দর দৃশ্যের দেখা মিলবে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে গেলে।
সোহেল মিয়া নামে একজন দমকলকর্মী বলেন, এই পুষ্টি বাগানের মাধ্যমে এখানে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনে একটি শুভ চিন্তার প্রতিফলন ঘটলো। গাছের যত্ন নেওয়া,কাজ করার মানসকিতা জাগ্রত করার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা মেটানো।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ১০ একর জমিতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ৬৯৪ টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে।
ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, জায়গাটা আগে আগাছা ও ঝোপঝাড়ে আচ্ছাদিত ছিলো। এখন আমরা এই পরিত্যক্ত জায়গাটিতে কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় শাক-সবজিসহ নানা রকমের ফল গাছ লাগাই। এতে আমাদের শাক-সবজির চাহিদার প্রায় ৮০ ভাগ এই পুষ্টি বাগান থেকেই পূরণ হচ্ছে। ফলে শাকসবজি কেনা বাবদ আর্থিক ব্যয়ও কমেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ এই আলোকে অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় আমরা কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজ, ও অন্যান্য উপকরণ সহায়তা দিচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের সামনে পরিত্যক্ত জায়গায় পুষ্টি বাগান করা হয়েছে। ফায়ার স্টেশন অফিসারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় এই পুষ্টি বাগানটি করা হয়েছে। এছাড়াও মাঠ পর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকদের এ বিষয়ে কারিগরি সহায়তা প্রদান করছেন। ফলে পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাড়ছে স্বনির্ভরতা।