নবম বিপিএলের শুরুটা দারুণ হলো রংপুর রাইডার্সের। আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারকাবহুল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে দিলো দলটি। আগে ব্যাটিং করে ১৭৬ রান তোলা রংপুর পরে কুমিল্লাকে আটকে দিয়েছে ১৪২ রানে। ৩৪ রানের দারুণ জয়ে পূর্ণ দুই পয়েন্ট তুলে নিলো নুরুল হাসান সোহানের দল।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৭৬ রানের জবাব দিতে নেমে ধারাবাহিক ব্যাটিং করতে পারেনি কুমিল্লা। মিরপুরের পিচে ১৭৬ রানের স্কোর সহজ নয়। এই স্কোর তাড়া করতে হলে কাউকে না কাউকে বড় স্কোর গড়তেই হতো। কুমিল্লার স্কোয়াডে তেমন ব্যাটার আছেনও। কিন্তু বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ সবাই।
দারুণ খেলতে থাকা ওপেনার লিটন দাস ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ফিরেছেন দলীয় ২৫ রানের মাথায়। তারপর তিনে নেমে দাপুটে ব্যাটিং করছিলেন ডেভিড মালান। কিন্তু দলীয় পঞ্চাশের পর এমন এক ধাক্কা খেলো কুমিল্লা পরে আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি।
৯ বলে ২টি চার ১টি ছয়ে ১৭ রান করা মালান দলীয় ৫১ রানে আজমতউল্লাহ ওমরজায়ের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হয়ে ফেরেন। খানিক বাদে অপর ওপেনার সৌকত আলীকে (১৬) ফিরিয়েছেন সিকান্দার রাজা। চারে নেমে অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ২৩ বলে ৩৫ রান করেছেন। তবে ইমরুল ফেরার পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ নবীরা ম্যাচ জেতানোর মতো ব্যাটিং করতে পারেননি।
২৫ বলে ১৫ রান করে উল্টো দলকে চাপে ফেলেছেন মোসাদ্দেক। মোহাম্মদ নবী ৪ বলে ৫ রান করে ফিরেছেন। শেষ দিকে ২৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯.১ ওভারে ১৪২ রানে গুটিয়ে গেছে কুমিল্লা। শেষ দিকে ১৩ বলে ১৯ রান করেছেন উইকেটরক্ষক জাকের আলী।
রংপুরের হয়ে ৩.১ ওভার বোলিং করে ২০ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন জাতীয় দলের তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ। রবিউল হক ৪ ওভারে ৩৩ ও সিকান্দার রাজা ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।
এর আগে রংপুরের চ্যালেঞ্জিং স্কোরে বড় অবদান রনি তালুকদারের। রনি তালুকদার যেন বিপিএলেরই খেলোয়াড়! সারা বছর তেমন আলোচনা নেই, কিন্তু বিপিএল এলেই যেন ব্যাট চওড়া হয়ে যায় বাংলাদেশের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা ওপেনারের! কুমিল্লার বোলিং ডিপার্টমেন্টে ফজলহক ফারুকী, মোহাম্মদ নবী, মোস্তাফিজুর রহমানের মতো বোলার। তবে শুরুতে এই শক্ত আক্রমণ যেন পাত্তাই পেল না রনি তালুকদারের কাছে!
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ নবীকে টানা দুই চার হাঁকিয়ে শুরু। তারপর ঝড় চলতেই থাকলো। নবম ওভারের চতুর্থ বলে আউট হয়েছেন দলীয় ৮৪ রানের মাথায়। তখন দলের ৮৪ রানের ৬৭-ই করেছেন রনি। মাত্র ৩১ বল খেলে এই রান করতে চার মেরেছেন ১১টি, ছক্কা ১টি।
তিনে নেমে শোয়েব মালিক বলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান তুলেছেন। দলীয় ১১৫ রানের মাথায় মোহাম্মদ নাঈম ইসলাম ৩৪ বলে ২৯ রান করে আউট হওয়ার পর চারে নেমে সুবিধা করতে পারেননি সিকান্দার রাজা। ১০ বলে ১২ রান করেছেন ফর্মে থাকা জিম্বাবুয়ান তারকা।
তবে পাঁচে নেমে কার্যকারী একটা ইনিংস খেলেছেন রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। শেষ অবদি ব্যাটিং করে ১১ বলে ১টি করে চার ছয়ে তুলেছেন ১৯ রান। শোয়েব মালিক রান আউট হয়ে ফিরেছেন ২৬ বলে ৩৩ রান করে।
কুমিল্লার হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন ফজলহক ফারুকী, মোস্তাফিজুর রহমান, খুশদিল শাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন। আফগান পেসার ফারুকী ৪ ওভারে রান দিয়েছেন ২৮, মোস্তাফিজ চার ওভারে দিয়েছেন ৩১ রান।