ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহায়ক আবুল কাশেম (৫৫) পানির পাম্প চালাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। শনিবার বিকেলে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা (আইসিইউ) কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। বিষয়টি নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের দত্তগ্রাম এলাকার বাসিন্দা আবুল কাসেম উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের অফিস সহায়ক হিসেবে প্রায় ২০ বছর ধরে চাকরি করে আসছেন। সেই সাথে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করতেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। এরই মাঝে গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলা পরিষদের পানির পাম্প সুইচ দেওয়ার সময় আগুনের সৃষ্টি হয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জন্য নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে মারা যান তিনি। এমন মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কে আহ্বায়ক ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা, উপজেলা জনসাস্থ্য প্রকৌশলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, আবাসিক প্রকৌশলী (পিডিবি) কে সদস্য করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে।
ঈশ্বরগঞ্জ বিদ্যুতের আবাসিক প্রকৌশলী ইমতিয়াজ মামুন বলেন, ঘটনারদিন ইউএনও মহোদয় ফোন দিয়ে লাইনটা বন্ধ করার জন্য আমাকে বলেন। পরে লাইন বন্ধ করে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। কেন এমন হলো এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক শক্তিশালী একটা মটর সেই মটরের মিটার পর্যন্ত সংযোগ সঠিক ছিলো কিন্তু মিটার থেকে মটরের সংযোগ ছিলো খুবই দুর্বল তাই এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
দায়িত্বরত উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মিজানুল ইসলাম আকন্দ বলেন, আবুল কাশেম তার কার্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করতেন। ওইদিনের দুর্ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের পর বলা যাবে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) তৌহিদ আহমেদ বলেন, ঘটনাটি নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হঠাৎ করে এমন একটি দূর্ঘটনা ঘটলো তাই বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করতেছি। তদন্ত শেষে বলা যাবে আসলে ঘটনাটি কেমনে ঘটলো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, পানি ব্যবস্থার জন্য মটরটি ব্যবহার করা হয়। তবে ওইদিনের দূর্ঘটনাটি খুবই একটি মর্মান্তিক ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে (এলজিইডি) আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পর বলা যাবে দূর্ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে।