দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের বাংলা আশ্বিন মাসের ২৫ তারিখ। আনুমানিক দুপুর ১২ টার দিকে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য মৃত সৈয়দ হোসাইন আহম্মদের নির্দেশে আল বদর আবুল হাসেমসহ ১৫-১৬জন সশস্ত্র রাজাকার সোহাগি বাজারে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। সরিষা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক তহসিলদার আ’লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক ও সোহাগি মাদরাসার হিসাব রক্ষক বৃ-কাঠালিয়া গ্রামের মোঃ নূরুল হক ওরফে তারা মিয়ার বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এরপর দুপুরে আ’লীগ সমর্থক হিন্দু ব্যাবসায়ী গোপাল চন্দ্র করকে অপহরণ করে আঠারোবাড়ি পাকিস্থান আর্মি ক্যাম্পে আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে গুলি করে হত্যার পর লাশ গুম করে। গুম করার পরে ১৯৭১ সালের কার্তিক মাসের ২৭ তারিখে আনুমানিক সকাল ১০ ঘটিকার দিকে ময়মনসিংহ বড় মসজিদ রাজাকার ক্যাম্পে আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে ব্রম্মপুত্র নদীর পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যার পর লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয় মো. হাসিম উদ্দিন ওরফে আবুল হাসেমসহ আরও ১৫-১৬ জন সশস্ত্র রাজাকার।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। মামলায় ট্রাইব্যুনাল আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।
রবিবার (২৫জুন) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাছিনুর রহমানের নেতৃতে অভিযান চালিয়ে সোহাগি ইউনিয়নের তার নিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এবিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করে রবিবার বিকেলে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।